ঈশ্বরদী উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাকশী ইউনিয়ন বাংলাদেশের সম্বৃদ্ধশালী ইউনিয়ন সমুহের মধ্যে অন্যতম। কি নেই পাকশীতে ? আছে রেলের পশ্চিমাঞ্চল এর পাকশী রেলওয়ে বিভাগের হেড অফিস, আছে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাত করণ এলাকা।
এখানে আছে ১০০ বছরের পুরাতন হাডিঞ্জ ব্রিজ,গড়ে উঠছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।পাকশী ভৌগলিক গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল ইংরেজরা। তাই তো এখানে তারা রেলের হেডকোয়াটার করেছিল, স্থাপন করেছিল ব্যায়বহুল হাডিঞ্জ ব্রিজ।
তাছাড়া পাহাড়সমান পুলে রেল লাইন স্থাপনে ব্যায় করেছিল অনেক টাকা। ইংরেজরা এতো কিছু বিনিয়োগ করেছিল নিজেদের স্বার্থে। যা তারা অনেক আগেই হাসিল করে ফেলেছে। পাকশীর ভৌগলিক গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল অত্যাচারী পাকিস্থান সরকার। তাই এখানে ১৩৩ একর জমি নিয়ে তারা স্থাপন করে নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস।
উত্তর বঙ্গের চিনিকল থেকে প্রাপ্ত আখের ছোবড়া তারা কাগজ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যাবহার করত। সরকারি এই কাগজ কলে ঈশ্বরদী, ভেড়ামারা,লালপুর, আটঘরিয়া সহ দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রায় ২ হাজার লোক কাজ করত। লাভ লোকসান এর মধ্যে ভালোই চলছিল পেপার মিলস।
এই পেপার মিলস দেশের সাদা কাগজের চাহিদা পূরণ করত। এভাবে চলতে চলতে ২০০১ সালের পরবর্তী সময়ে চরম দূর্ণীতি আর অনিয়ন দেখা দেয়। শুরু হলো মিলের শ্রমিক, কর্মচারী, অফিসার, ঠিকাদার ও সাপ্লায়ারদের চরম দুর্নীতি। ফলে ক্রমাগত লোকসান হতে থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত পেপার মিলে।
তৎকালীন বি এন পি সরকার দুর্নীতি বন্ধ না করতে পেরে এই কাগজ কল টি বন্ধ করে দেয়। হঠাৎ চাকরিচ্যুত হয়ে পড়েন প্রায় দুই হাজার মানুষ। নিশ্চিত সরকারি চাকরি হারিয়ে অনেকে হাট এটাক করেন,অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন কেউ কেউ হঠাৎ চাকরি হারানোর বেদনা সইতে না পেরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
পাকশী পেপার মিলের কলোনিগুলো ফাকা হতে থাকে। কলোনি ছাড়ার সময় সে কি আবেগঘণ পরিস্থিতি যা নিজ চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। দীর্ঘদিনের মিলের সহকর্মী ও প্রতিবেশীদের বিদায় এবং নিজেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ তাদের বেদানাক্রান্ত করে তুলেছিল।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস